বিশ্ব দরবারে ডোকরা শিল্প
বিশ্ব দরবারে বাংলা আমাদের গর্বের ( Dokra Art )। বাংলা আমাদের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি বিভিন্ন দিক থেকে মিশে আছে । আর এই বাংলার সম্মানের কৃতিত্বের ক্ষেত্রে অনেক অংশ স্থান দখল করে আছে বাংলার শিল্প। পশ্চিমবঙ্গের শিল্প গুলির মধ্যে অন্যতম এক শিল্প হলো ডোকরা শিল্প। ডোকরা হল “হারানো মোম ঢালাই” পদ্ধতিতে তৈরি একটি শিল্প কর্ম। এই শিল্পের ইতিহাস প্রায় ৪০০০ হাজার বছরের পূরানো।ভারত ছাড়াও চীন,মালয়েশিয়া,জাপান প্রভৃতি দেশে এই শিল্প কর্ম পাওয়া যায়। ভারতের প্রথম মধ্যপ্রদেশ এ বস্তার ও ছত্তিসগড়ে এই শিল্পের উদ্ভব হয়। পরে ঝাড়খণ্ড ও বিহার-এ ছড়িয়ে পড়ে। আরও পরে পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা রাজ্যে এর প্রসার ঘটে।
ডোকরা শিল্প শিল্পের প্রসার
পশ্চিমবঙ্গে ডোকরা ( Dokra Art ) শিল্পের প্রসার ঘটে আজ থেকে কয়েকশো বছর পূর্বে। প্রধানত ঝাড়খণ্ড থেকে এই শিল্প পুরুলিয়া হয়ে এই শিল্প রাজ্যের পশ্চিম প্রান্তের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে পড়ে। সেগুলির মধ্যে অন্যতম জেলাগুলো হল- বাঁকুড়া, বর্ধমান, পুরুলিয়া ও পশ্চিম মেদিনীপুর। পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলা-বিকনা, খাতডার লক্ষীসাগর, শববেড়িয়া। বর্ধমান-গুসকরার দরিয়াপুর ও পুরুলিয়ার নাডিহায় ডোকার শিল্পের প্রধান কেন্দ্র গুলি অবস্থিত। এর মধ্যে বাঁকুড়ার বিকনা ও বর্ধমানের দরিয়াপুর উল্লেখযোগ্য। এই দুই জায়গার ডোকরা শিল্পের প্রসিদ্ধি জগৎজোড়া।পশ্চিমবঙ্গের ডোকরা শিল্পের অন্যতম এক প্রাণকেন্দ্র পূর্ব বর্ধমানের দারিয়াপুর ।
কেমন আছেন বাংলার ডোকরা শিল্পীরা ?
কেমন আছেন শিল্পীরা ? সেখানে গিয়ে জানা গেল ( Dokra Art ) শিল্পের অবস্থা বেশ সঙ্গীন। কিছু বছর আগে রাজ্য সরকার বহু টাকা ব্যয় করে এই দারিয়াপুর ডোকরা হাব তৈরি করে দিয়েছিল , কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণ এর অভাবে তা আজ ধুঁকছে । ডোকরা নিদর্শন এর সামনে গজিয়েছে আগাছা , পর্যটক দের বসার স্থান নোংরা হয়ে পড়ে, উপযুক্ত বিদ্যুতের আলোর ব্যবস্থা নাই রাত্রে ইত্যাদি আনুষঙ্গিক বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত এই ডোকরা হাব ।স্থানীয় রাজ্য সরকার পুরস্কার প্রাপ্ত ডোকরা শিল্পী সুভাষ মন্ডল বলেন ডোকরা শিল্প বাংলার এক অন্যতম ঐতিহ্যের শিল্প। গত পঁয়তাল্লিশ বছর ধরে এ পেশায় যুক্ত আছি। আমার হাতের কাজ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তেও বিক্রি হয় । ( Dokra Art )কিন্তু সত্যি কথা বলতে গেলে এখন যেন ডোকরা শিল্প পরিকল্পনার অভাবে ধুঁকছে, আমাদের মতন গরিব শিল্পীদের রাজ্য সরকার যদি একটি লোনের ব্যবস্থা করে দেন তাহলে এই শিল্প টাকে আরো উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া যায়। অন্যদিকে আক্ষেপের সুরে ডোকরা শিল্পী হেমন্ত মুর্মু বললেন কেন্দ্র অথবা রাজ্য সরকার যদি এই ডোকরা ( Dokra Art ) শিল্পীদের দিকে ঠিকঠাক ভাবে তাকাতো তাহলে হয়তো ডোকরা শিল্প বিশ্বসেরা হতো ।( Dokra Art ) তিনিও একই সুরে বললেন সরকার যদি তাদের পুঁজির ব্যবস্থা করে দিতেন তাহলে তারা স্বাচ্ছন্দে শিল্পটাকে একটা নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিতেন । তাদের এই কথাগুলো সত্যি ভাববার মতনই বিষয় এই অগ্নি মূল্যের বাজারে কম পুঁজিপতি শিল্পীরা শুধুমাত্র পুঁজির অভাবেই শিল্পটাকে ঠিকঠাক ভাবে মিলে ধরতে পারছে না বিশ্বের দরবারে । এই কাজটি অনেক বেশি সহজ হতো যদি জনকল্যাণকামী সরকার , জনগণের সরকার যার কাজ জনগণকে সেবা করা উপযুক্তভাবে এই সমস্ত শিল্পীদের পাশে এসে দাঁড়ায়।