কালিপুজোর পর পূর্ণিমা তিথিতে শুরু হতে চলেছে কোচবিহারের ঐতিহ্যবাহী রাসমেলা। তথ্য অনুসারে জানা যায় কোচবিহারের মহারাজা হরেন্দ্র নারায়ন ১৮১২ সালের রাস পূর্ণিমা তিথিতে কোচবিহার থেকে বেশ কিছুটা দূরে ভেটাগুড়ি নামক স্থানে নবনির্মিত রাজপ্রাসাদে যান। সেই উপলক্ষ্যে সেখানে রাসমেলা বসে। ১৯১৭ সালে এই মেলা কোচবিহার প্যারেড গ্রাউন্ডে যা বর্তমানে রাসমেলার মাঠ নামে পরিচিত সেখানে স্থানান্তরিত হয় এবং প্রতিবছর মেলা ওখানেই বসে। কোচবিহারের প্রাণের ঠাকুর মদনমোহন বাড়িতে রাস পুজো অনুষ্ঠিত হয়, সেখানে লাগানো হয় রাসচক্র। রাসপুজোর পর এই রাসচক্র ঘুরিয়ে রাসোৎসব ও মেলার শুভ সূচনা করেন কোচবিহার দেবত্র ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান জেলাশাসক। আগে মহারাজা এই রাসচক্র ঘুরিয়ে রাসোৎসব ও মেলার শুভ সূচনা করতেন। দেবত্র ট্রাস্টি বোর্ড ও কোচবিহার পৌরসভা এই মেলা পরিচালনা করে। এবছর নভেম্বর মাসের সাত তারিখে রাস পুজো এবং আট তারিখে কুড়িদিন ব্যাপী মেলার শুভ সূচনা হবে। মেলায় আসা পুণ্যার্থীদের বিশ্বাস এই রাসচক্র ঘুরিয়ে মদনমোহন ঠাকুর দর্শন করে মেলায় ঘুরলে পূণ্য অর্জন হয়। তবে হিন্দু মন্দিরের এই রাসচক্র তৈরি করেন আলতাফ মিঞা। জানা গেছে বংশ পরম্পরায় তারা এই কাজ করে আসছেন। কোজাগরী লক্ষী পূর্ণিমার দিন নিরামিষ ভোজন করে একাজ শুরু করেন আলতাফ মিঞা। এটাই নিয়ম এবং সেদিন থেকে পুরো এক মাস নিরামিষ ভোজন করে এই রাসচক্র নির্মানের কাজ হয়।বাঁশের বাতা তৈরি করে তা দিয়ে গম্বুজ আকৃতির বাইশ ফুট লম্বা এই চক্রে থাকে কাগজের কারুকাজ এবং রাধাকৃষ্ণ, শিব, পার্বতী, লক্ষী সরস্বতী সহ বত্রিশ জন দেব দেবীর ছবি। এই চক্র তৈরি করতে গোটা কুড়ি বাঁশ লাগে বলে জানান আলতাফ মিঞা। ষাট বছর বয়সী আলতাফ মিঞা একাজ করে চলেছেন নিষ্ঠাভরে। কোচবিহার পৌরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ তার বাড়িতে গিয়ে খোঁজ খবর নিয়ে জানান আলতাফ মিঞা ‘র এই কাজ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্যের ধারক যা শুধু কোচবিহারবাসী নয় সারা দেশের কাছে গৌরবের।
Rabindra Nath Ghosh CoochBehar: রাসচক্র তৈরি করছেন আলতাফ মিঞা, পরিদর্শনে কোচবিহার পৌরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ
রিপোর্ট : নিজস্ব সংবাদদাতা , এই যুগ, কোচবিহার