প্রথমবার বহরমপুরে দুর্গাপুজোর কার্নিভাল ঘিরে উন্মাদনা ছিল তুঙ্গে। শুক্রবার ওয়াইএমএ ময়দানে বড় পুজোকে নিয়ে কার্নিভাল করা হয় বলে জানান জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র। জেলা প্রশাসন আগেই জানিয়েছে, কলকাতার পাশাপাশি এবার জেলার সদর শহরে কার্নিভালের আয়োজন করা হয় । বহরমপুরের ওয়াইএমএ মাঠে দু’দিকে দর্শকদের জন্য আসন ছিলো। মাঝখান দিয়ে প্রতিমা নিয়ে যাওয়া হয় । তারপর কেএন কলেজের ঘাটে প্রতিমা নিরঞ্জন করা হয় । এবার ইউনেস্কো বাংলার দুর্গাপুজোকে বিশেষ স্বীকৃতি দিয়েছে। গত ১ সেপ্টেম্বর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলায় জেলায় পুজোর বিশেষ কার্নিভাল হবে বলে ঘোষণা করেছিলেন। সেই মোতাবেক শুক্রবার মুর্শিদাবাদ জেলায় পুজোর কার্নিভাল।
বিশেষ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি জেলায় একই সঙ্গে কার্নিভাল হয় । জানা গিয়েছে, পুজো কমিটিগুলি সুসজ্জিতভাবে প্রতিমা নিয়ে আসে। পাশাপাশি সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও হয় । প্রত্যেকটি পুজো কমিটিকে মূল মঞ্চের সামনে দু’মিনিটের একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করার সুযোগ দেওয়া হয় । নবান্নের তরফে এই কার্নিভাল নিয়ে জেলা প্রশাসনকে একগুচ্ছ নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। জেলার তথ্য সংস্কৃতি দপ্তর সেই নির্দেশ মোতাবেক কার্নিভালের আয়োজন করেছে। পুজো উদ্যোক্তাদের এই কার্নিভালে সুযোগ দেওয়া যায় ।দশমী থেকে বহরমপুরের বিভিন্ন ঘাটে তিন দিন ধরে প্রতিমা নিরঞ্জন চলে। দশমীর বিকেল থেকে ভাগীরথীর বিভিন্ন ঘাটে ২৮৪টি প্রতিমা নিরঞ্জন হয়। আরও ২২টি প্রতিমা নিরঞ্জন করা হয়। বহরমপুরের কেএন কলেজ ঘাটে সবচেয়ে বেশি প্রতিমা নিরঞ্জন হয়েছে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন জেলার পুলিস সুপার কে শবরী রাজকুমার, অতিরিক্ত পুলিস সুপার(সদর) সুবিমল পাল, পুরসভার চেয়ারম্যান নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায়। জেলা পুলিসের তরফে প্রত্যেকটি ঘাটে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত প্রতিমা নিরঞ্জন চলে। নাড়ুগোপালবাবু বলেন, দশমী, একাদশ ও দ্বাদশী মিলিয়ে বহরমপুরের বিভিন্ন ঘাটে প্রতিমা নিরঞ্জন হয়েছে। সুষ্ঠুভাবে পুলিসের সহযোগিতায় পুজো কমিটিগুলো প্রতিমা বিসর্জন করেছে। কোথাও কোনও অসুবিধা হয়নি। জেলা পুলিসকে ধন্যবাদ জানাই। বুধবার সকাল থেকে লালবাগ মহকুমার লালবাগ, জিয়াগঞ্জ, ভগবানগোলা ও লালগোলায় প্রতিমা বিসর্জন শুরু হয়।
লালবাগ ও জিয়াগঞ্জের ভাগীরথীর ঘাটগুলির পাশাপাশি স্থানীয় জলাশয়েও বিসর্জন হয়। লালবাগে ১০০টির বেশি, জিয়াগঞ্জে ১০৪টি, লালগোলায় ২৭টি, রানিতলায় ৩০টি প্রতিমা বিসর্জন হয়েছে। বিসর্জনের সময় নদীর ঘাট এবং জলাশয়ের পাড়ে পুলিস মোতায়েন ছিল। রঘুনাথগঞ্জের ভাগীরথী নদীর সদরঘাটে উভয় পাড়েই বিসর্জন হয়। এছাড়া সাগরদিঘিতেও বিসর্জন হয়। প্রায় ৭০টি প্রতিমার বিসর্জন হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এছাড়া সামশেরগঞ্জের ধুলিয়ান কাঞ্চনতলা গঙ্গার ঘাটে ৫৩টি ঠাকুর বিসর্জন হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। এছাড়া ফরাক্কায় ২৯টি প্রতিমার বিসর্জন হয়েছে।কান্দী মহকুমা এলাকার বেশিরভাগ পুজো বিসর্জন করা হয় গ্রামের পুকুরগুলিতে। তবে কান্দী পুরসভার উদ্যোগে কানা ময়ূরাক্ষী নদীর থানার ঘাট, সতীরঘাট ও রষোড়া দহঘাট এলাকায় বিসর্জন হয়। দশমীর দিন ২০টি প্রতিমা বিসর্জন করা হয়েছে। শুক্রবারের মধ্যে সমস্ত প্রতিমা বিসর্জন করা হয় ।
Durga Puja carnival Murshidabad: মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুরে কড়া নিরাপত্তায় দুর্গাপুজো কার্নিভাল
রিপোর্ট : রাজেন্দ্র নাথ দত্ত , এই যুগ, মুর্শিদাবাদ