হুগলী জেলার আরামবাগের একটি ছোট্ট গ্রাম তালা মেরে কেটে হাজার খানেক লোকের বাস, এখানেই একসময় জমিদার ছিল পালিত পরিবার।সোনা যায় বর্ধমানের মহারাজা বিজয় চাঁদ মহতাবের সাথে ছিলো তাদের জমিদারি, এমনকি হুগলির বালিপুরে ছিল তাদের মহল ও।তখন থেকেই দুর্গা পূজার প্রচলন চিলো জমিদার বাড়িতে। পূজার সময় পনেরো দিন আগে থেকে বসত বোধন ও।গ্রাম্য এলাকা হওয়ায় সোনা যায় সেই সময় ছিল ডাকাত দলের খুব উৎপাত।পালিত পরিবারের এক সদস্য জানান এমনই এক সময়ে জমিদার বাড়িথেকে আনুমানিক দশ কিলোমিটার দূরে বর্তমানে পূর্ব বর্ধমান জেলার নেওর পাসন্ডা নামে এক জায়গাতেই ছিল আজকের এই নেওর বাসিনির মন্দির। কোনো এক রাতে ডাকাতরা ডাকাতি করতে যাবার সময় মায়ের মন্দির দেখতে পান কিন্তু সেদিন ডাকাতি করতে অসফল হওয়ায় ফিরে আসার পথে রাগে মায়ের শরীর থেকে সমস্ত গহনা লুঠ করে মায়ের শরীর থেকে মস্তক আলাদা করে তা একটি সাঁকোয় ভাসিয়ে দেন। কাকতলীয় ভাবে সেই সাঁকোটি পালিত বাড়ির পিছনের দিক দিয়ে প্রবাহিত।সোনা যায় সেই রাতেই পালিত বাড়ির তৎকালীন জমিদার ভৈরব পালিত এবং জমিদারদের তৎকালীন কুলপুরোহিত সন্তোষ মল্লিক একই রাতে সপ্নাদেশ পান মায়ের, তিনি তাদের জানান সেই সাঁকোয় তিনি এসে আটকে আছেন তাকে নিয়ে এসে যেন তারা প্রতিষ্ঠা করেন তাদের মন্দিরে।পরদিন সকালে দুজনেই সেই জায়গায় পৌঁছে দেখেন একটি মাটির মূর্তির মুখ সেখানে,যদিও জলে কিছু অংশ গোলে গেলেও দুটি চোখ ও নাকে নৎ তখন প্রায় স্পষ্ট।তার পরেই পালিত বাড়ির মন্দিরে প্রতিষ্ঠা পান নেওর বাসিনি। কালের চক্রে জমিদারি সেই প্রথা পরে বন্ধ হয়ে যায় সেই সঙ্গে বন্ধ হয়ে যায় দুর্গা পুজোর পনেরো দিন আগের বোধন এমনকি দুর্গা প্রতিমা আসাও কিন্তু আজও একই ভাবেই পুজোর ওই চার দিন পালিত বাড়ির মন্দিরের ওই দুর্গা মায়ের বেদিতে দূর্গা রূপেই পূজিতা হন মা নেওর বাসিনি।উল্লেখ্য দুর্গা মন্দিরের ঠিক বাম পাশেই রয়েছে মহাদেবের ছয় ছয়টি মন্দির,যা রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে আজ প্রায় ভগ্নদশায় পরিণত হয়েছে।এমনকি পরিবারের সদস্যদের মত তারা নাকি শুনেছেন প্রায় ৪৫০বছরের পুরানো এই দুর্গা মন্দিরের নিচে রয়েছে গুপ্তধনও। সোনা যায় অনেক মানুষ অনেক ক্ষেত্রে অনেক অসুখ থেকেও মুক্তি পেয়েছেন মায়ের কাছে প্রার্থনা জানিয়ে।বিজ্ঞান যাই বলুক মানুষের বিশ্বাস ভক্তি নিয়েই বছর বছর ধরে পূজা পেয়ে আসছেন মা পালিত বাড়ির মা নেওর বাসিনি।
Hooghly Arambag: জমিদারি আড়ম্বর না থাকলেও প্রায় ৪০০বছর ধরে একই ভাবে আরামবাগের তালার পালিত পরিবারে পূজিতা হন শরীর হীন মা নেওর বাসিনি
রিপোর্ট : সুমিত পালিত , এই যুগ, হুগলী