শনিবার , সেপ্টেম্বর 21 2024
Breaking News

Western Ghats: ভ্রমন জিজ্ঞাসা -পশ্চিম ঘাট পর্বত

Western Ghats: ভ্রমন জিজ্ঞাসা -পশ্চিম ঘাট পর্বত ভারতবর্ষ এক বিচিত্র দেশ। (Western Ghats) এর একদিকে রয়েছে তুষার ধবল হিমালয় আর একদিকে বিস্তৃত জলরাশি (Western Ghats)। একদিকে মরুভূমির রুক্ষতা তো আরেকদিকে মালভূমি আর জঙ্গলের ওপার রহস্য। আমার ভ্রমন পিপাসু মন তাই মাঝে মাঝেই বেরিয়ে পরতে চায় এই বিভিন্নতার খোঁজে। আর তাই এবারের ভ্রমণ ভারতের পশ্চিম দিকে।

পশ্চিম ঘাট পর্বত :

(Western Ghats) বইতে পড়েছিলাম যে পশ্চিম ঘাট পাহাড়ের খাদে বয়ে চলা সাবিত্রী নদীকে ছুঁয়ে, খাড়া পাহাড়ের গা ঘেঁসে বয়ে চলা হাওয়া , নিচ থেকে উপরের দিকে উঠে আসে । তীব্র অথচ ফুরফুরে সেই হওয়ার মুখে যে কোন হালকা জিনিস ছেড়ে দিলে, সেটা অনায়াসে ঘুড়ির মতো পাক খেতে খেতে আকাশে উড়ে যায়।

ভিড়ে ঠাসা আর্থার সিট পয়েন্টে দাঁড়িয়ে, এক টুকরো পাতলা কাগজ সেই খাদের মুখে ধরা মাত্রই খাদের নিচ থেকে উঠে আসা সেই তীব্র হাওয়া কাগজটিকে বহু উপরে উড়িয়ে নিয়ে গেল। উপস্থিত জনতা আশ্চর্য হয়ে সেই হাওয়ার কারসাজি দেখে চমৎকৃত হয় ।

ভ্রমন জিজ্ঞাসা :

(Western Ghats) অক্টোবরের ছুটি মানেই, মুম্বাই ও পুনের কাছের এই ছোট শৈল শহরে উপচে পরা মানুষের ভীড়। ঐ দুই শহর থেকে আসা গাড়ির ভিড়ে, এই শৈল শহর হয়তো পুনে বা মুম্বাইয়ের বায়ু দূষণের সঙ্গে অনায়াসে পাল্লা দিতে পারে।
তবে, পশ্চিম ঘাটের ঘন সবুজ জঙ্গলে সেই বায়ু দূষণকে ধারণ করে নিয়ে, ভ্রমণ পিয়াসীদের এক মনোরম পরিবেশ উপহার দেয় । কখনো নিরাশ করে না।

পশ্চিম ঘাটের সৌন্দর্য ঠিক খোলে না:

রাস্তার দুই পাশে ফুটে থাকা, হলুদ ফুলের দল সগর্বে হাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মাথা দোলাতে দোলাতে আমন্ত্রণ করে তার আতিথিদের ।শুনেছি, বৃষ্টির ঠিক পরে পরেই নাকি মহাবালেশ্বরের হলুদ-সবুজ সৌন্দর্য দেখা যায় (Western Ghats)। যদিও পশ্চিম ঘাট আমাদের দেশের চিরহরিৎ জঙ্গলের মধ্যে আসে, স্থানীয়রা বলে, অন্য সময়ে পশ্চিম ঘাটের সৌন্দর্য ঠিক খোলে না।
আর, আমরা যাওয়ার ঠিক কিছুদিন আগেই বৃষ্টিতে নেয়ে ধুয়ে মহাবালেশ্বর যেন আমাদের জন্যে অপেক্ষা করছিল – তাই আমরা চমৎকার উজ্জ্বল এক পাহাড়ি দিন উপহার পেয়েছিলাম।

মহাবালেশ্বর:

ভ্রমনের শুরুতেই (Western Ghats), মহাবালেশ্বরের আর্থার সিট পয়েন্ট থেকে আমরা মহাবালেশ্বর দর্শন শুরু করেছিলাম । সাধারণত, অনেকে অন্যান্য পয়েন্ট গুলো দেখে এসে, একদম শেষে এই পয়েন্টে আসে। কিন্তু, আমরা একটু অন্যরকম ভাবেই শুরু করেছিলাম এমনি মনের ইচ্ছেতে।
আর্থার সিট পয়েন্ট থেকে সাবিত্রী নদীকে সরু এক সুতোর মতোই মনে হয়। মাঝে মাঝে কুয়াশা আসে, ঢেকে দিয়ে যায়। আলো ছায়ার চমৎকার এক মায়াবী পরিবেশ তৈরি হয়।
(Western Ghats) কেন এই পয়েন্টের নাম – আর্থার সিট হয়েছিল? সামনের এক পাথুরে ফলকে লেখা আছে – Sir Arthur Malet, প্রতিদিন এই জায়গায় এসে দূরের সাবিত্রী নদীকে দেখতেন। যে নদী তাঁর স্ত্রী ও সন্তানকে নিজের কাছে টেনে নিয়েছিল।
হয়তো, তিনি দূর থেকে ঐ নদীকে দেখে ওদের আত্মার শান্তি প্রার্থনা করতেন, বা প্রকৃতির নিঠুরতার কাছে নিজেকে সমর্পণ করে দিতেন, কিংবা প্রশ্ন করতেন – কেন?
সাবিত্রী ছুঁয়ে আসা সেই দামাল হাওয়ায় হয়তো (Western Ghats) মিশে থাকতো ওদের অস্তিত্বের শেষ কথা গুলো।
পড়ন্ত হলুদ দুপুরে পশ্চিম ঘাটের পাহাড়ের গায়ে যেন আজও একটু মন কেমনের উদাসী সুর ভেসে বেড়ায় । তাই মহাবালেশ্বরের ঐ আর্থার সিট পয়েন্ট থেকে একটু মন কেমন, একটু উদাসীনতা, একটু জীবন চেতনা নিয়ে ফিরতে হয়।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।