শুক্রবার , ডিসেম্বর 13 2024
Breaking News

Kolkata: বুকভরা ব্যথা আর চোখের জল নিয়ে ‘যন্ত্রণা দিবস’ পালন করলেন ধর্ণারত হবু শিক্ষক-শিক্ষিকা পদপ্রার্থীগণ

রিপোর্ট : নিজস্ব সংবাদদাতা , এই যুগ, কলকাতা

kolkata: বুকভরা ব্যথা আর চোখের জল নিয়ে 'যন্ত্রণা দিবস' পালন করলেন ধর্ণারত হবু শিক্ষক-শিক্ষিকা পদপ্রার্থীগণ গান্ধীমূর্তির পাদদেশে ধর্ণা মঞ্চেই বুকভরা ব্যথা আর চোখের জল নিয়ে ‘যন্ত্রণা দিবস’ পালন করলেন নবম- দশম এবং একাদশ – দ্বাদশের হবু শিক্ষক-শিক্ষিকা পদপ্রার্থীগণ। আজ ৫ ই সেপ্টেম্বর, শিক্ষক দিবস। রাজ্য জুড়ে একদিকে মহাসমারোহে শিক্ষক- শিক্ষিকাদের প্রতি শ্রদ্ধা ঞ্জাপন করা হচ্ছে। অন্যদিকে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে মেধাতালিকা ভুক্ত হওয়া সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশনের দুর্নীতির কারণে চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়ে নবম – দশম এবং একাদশ – দ্বাদশের হবু শিক্ষক-শিক্ষিকা পদপ্রার্থীগণ গান্ধীমূর্তির পাদদেশে ধর্ণা মঞ্চেই বুকভরা ব্যথা আর চোখের জল নিয়ে যন্ত্রণা দিবস পালন করলেন। ৫ ই সেপ্টেম্বরে শিক্ষক দিবসের দিনে দুই ভিন্ন ধরনের দিবস পালন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে এক নজিরবিহীন দৃষ্টান্তের সৃষ্টি করেছে । যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চের স্টেট কো-অর্ডিনেটর সুদীপ মন্ডল জানিয়েছেন যে রাজ্য জুড়ে একদিকে চলছে শিক্ষক দিবস কিন্তু অন্যদিকে আমাদের বঞ্চিত শিক্ষক-শিক্ষিকা পদপ্রার্থীগণ ধর্ণা মঞ্চেই বুকভরা ব্যথা আর চোখের জল নিয়ে যন্ত্রণা দিবস পালন করছেন । খুবই কষ্টে অতিবাহিত হচ্ছে ধর্ণারত বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীদের প্রতিটি দিন। যাদের নিয়োগ অগ্রাধিকার ছিল,তারা আজ বঞ্চিত হয়েছে ,ধর্ণা চালিয়ে যাচ্ছেন। যারা সমাজ গঠনের কারিগর আজ তারা চোখের জলে ভাসছেন। কবে বঞ্চিত শিক্ষক-শিক্ষিকা পদপ্রার্থীগণ তাদের ন্যায্য চাকরি ফিরে পাবেন? নবম- দ্বাদশের মেধাতালিকা ভুক্ত অথচ চাকরিতে নিয়োগপত্র না পাওয়া শিক্ষক-শিক্ষিকা পদপ্রার্থীদের জনপ্রিয় রাজ্য নেতৃত্ব সুদীপ মন্ডল ৫ ই সেপ্টেম্বর আবারও রাজ্যের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয়ার কাছে জরুরিকালীন হস্তক্ষেপ চেয়ে আবেদন করেছেন। তিনি জানিয়েছেন যে নবম-দ্বাদশের মেধাতালিকা ভুক্ত অথচ চাকরিতে নিয়োগপত্র না পাওয়া সকল শিক্ষক-্শিক্ষিকা পদপ্রার্থীদের অতি দ্রুত চাকরিতে নিয়োগ করতে হবে। তাদের জীবন থেকে মূল্যবান ছয়টি বছর নষ্ট হয়ে গিয়েছে। সামনে দুর্গাপূজা আসছে। বাংলার ঘরে ঘরে খুশির উৎসব পালিত হবে, শুধু আমরা চোখের জলে ভাসবো এমন যেন না হয়। দুর্গাপূজার আগেই মেধাতালিকা ভুক্ত অথচ চাকরি থেকে বঞ্চিত সকলকেই নিয়োগপত্র দিতে হবে। কলকাতার বুকে যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চের ব্যানারে ৫৪০ দিন ধরে এই বঞ্চিত হবু শিক্ষক-শিক্ষিকা পদপ্রার্থীগণ ন্যায্য চাকরি ফিরিয়ে আনতে শান্তিপূর্ণ ভাবে ধর্ণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের নিয়োগের জন্য একাধিক বার আশ্বাস দেওয়া হলেও বাস্তবে তার ফলশ্রুতি হয়নি। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বিভিন্ন জেলা গুলি থেকে বঞ্চিত শিক্ষক-শিক্ষিকা পদপ্রার্থীগণ ধর্ণা মঞ্চে এসে ধর্ণা চালিয়ে যাচ্ছেন। কবে তাদের চাকরিতে নিয়োগ করা হবে? প্রশ্ন সকলের কিন্তু উওর নেই। বঞ্চিত শিক্ষক-শিক্ষিকা পদপ্রার্থীদের অধিকাংশই রাজ্যের সাধারণ কৃষক, শ্রমিক, দিনমজুর , খেটেখাওয়া পরিবার গুলির সন্তান। সেই পরিবার গুলির স্বপ্ন আজ ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছে। পরিবার গুলি তাদের জমি – জায়গা, অলঙ্কার,ঘটি-বাটি সর্বস্ব বিক্রি করে তাদের ছেলে- মেয়েদের এম.এ, বি.এড করিয়ে শিক্ষক- শিক্ষিকা তৈরির প্রচেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশনের ক্রমাগত দুর্নীতি বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে উক্ত পরিবার গুলির স্বপ্ন ভেঙে দিতে। মেধাতালিকায় সামনের দিকে থেকেও চাকরিতে নিয়োগপত্র পাননি উক্ত পরিবার গুলির যোগ্য চাকরি প্রার্থীগণ কিন্তু মেধাতালিকা অনেক পিছনের দিকে থাকা বহু চাকরি প্রার্থীদের অবৈধভাবে নিয়োগ করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। মেধাতালিকায় নাম নেই এমন ফেলকরা বহু প্রার্থীদের দুর্নীতি করে নিয়োগ করা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশন কর্তৃক। অথচ তাদের নিয়োগ অগ্রাধিকার ছিল,যারা যোগ্য , মেধাতালিকায় সামনের দিকে রয়েছে তাদের চাকরিতে নিয়োগ করা হয়নি।সেই সকল বঞ্চিত শিক্ষক-শিক্ষিকা পদপ্রার্থীগণ গান্ধীমূর্তির পাদদেশে দিনের পর দিন চোখের জলে ভেসে যাচ্ছে, বুকভরা ব্যথা নিয়ে ছটফট করছে। প্রচন্ড বৃষ্টি অথবা প্রখর রোদ্দুরেও ধর্ণা অব্যাহত।ধর্ণারত চাকরি প্রার্থীগণ একের পর এক অসুস্থ হয়ে পড়া সত্ত্বেও ধর্ণা মঞ্চ ছেড়ে কেউ বাড়ি যাচ্ছে না । তাদের চোখে- মুখে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।ধর্ণা মঞ্চে নেই পর্যাপ্ত পানীয় জলের ব্যবস্থা, নেই মহিলা টয়লেটের ব্যবস্থা। খুব কষ্টে দিন অতিবাহিত করছেন বঞ্চিত হবু শিক্ষক-শিক্ষিকা পদপ্রার্থীগণ। তারা তাদের ন্যায্য চাকরি ফিরিয়ে আনতে মরিয়া ভাবে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।