জীবন নিয়ে খেলা চলছে নবম-দশম এবং একাদশ – দ্বাদশ স্তরের মেধাতালিকা ভুক্ত অথচ চাকরিতে নিয়োগপত্র না পাওয়া শিক্ষক-শিক্ষিকা পদপ্রার্থীদের। পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশনের দুর্নীতির কারণে চাকরি থেকে বঞ্চিত শিক্ষক-শিক্ষিকা পদপ্রার্থীগণ গান্ধীমূর্তির পাদদেশে বুকভরা যন্ত্রণায় ছটফট করছে । সব খবরের নীচে চাপা পড়ে যাচ্ছে তাদের যন্ত্রণাময় জীবনের কথা। কবে তাদের এই যন্ত্রণার অবসান হবে? কবে তারা তাদের ন্যায্য চাকরি ফিরে পাবেন? কবে তারা কলকাতার বুক থেকে নিজ নিজ পরিবারের কাছে ফিরে যাবেন? ৫৩৫ দিন অতিবাহিত হলেও তাদের প্রতি মানবিকতা দেখায় নি সরকার। জরুরীকালীন হস্তক্ষেপ করেও কি তাদের সমস্যার সমাধান করা যেত না? প্রশ্ন একগুচ্ছ কিন্তু উওর দেবে কে? ২০১৬ সালের প্রথম এস এল এস টি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে মেধাতালিকা ভুক্ত অথচ স্কুল সার্ভিস কমিশনের একাধিক ষড়যন্ত্র এবং দুর্নীতির শিকার এই বঞ্চিত শিক্ষক-শিক্ষিকা পদপ্রার্থীগণ এমনটাই জানা যাচ্ছে। তাদের একাধিক ইতিবাচক আশ্বাস দেওয়া হলেও সেই আশ্বাস কার্যকর করা হয় না।ফলে তারা বার বার আন্দোলন করে, অনশন এবং ধর্ণায় বসতে বাধ্য হয়। তাদের দাবি নবম- দ্বাদশের মেধাতালিকা ভুক্ত অথচ চাকরিতে নিয়োগ না পাওয়া সকল শিক্ষক-্শিক্ষিকা পদপ্রার্থীদের অতি দ্রুত চাকরিতে নিয়োগ করতে হবে।যতদিন না তাদের দাবি পূরণ হবে ততদিন তারা কলকাতার বুকে ধর্ণায় বসে থাকবেন এমনটাই জানা যাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী মারফত তারা একাধিক বার আশ্বাস পেয়েছেন আবার সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস দলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায় মহাশয়ের সাথে চাকরি প্রার্থীদের একটি অংশের বৈঠক হলেও সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। হাইকোর্টে শিক্ষক নিয়োগের মামলায় একাধিক দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসছে। পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশনের একাধিক দুর্নীতি প্রমাণিত হচ্ছে। কিন্তু যারা দুর্নীতির কারণে বঞ্চিত হয়েছেন তাদের সমস্যা সমাধানের কোনো রকম পথ বের করার জন্য স্কুল সার্ভিস কমিশন, সরকার, হাইকোর্ট কোন পক্ষের সদিচ্ছা দেখা যাচ্ছে না। তিলে তিলে শেষ হচ্ছে বঞ্চিত শিক্ষক-শিক্ষিকা পদপ্রার্থীদের জীবন। গান্ধীমূর্তির পাদদেশে দিনের পর দিন চোখের জল ফেলা ছাড়া বঞ্চিত ধর্ণারত শিক্ষক-শিক্ষিকা পদপ্রার্থীদের আর কোনো উপায় নেই। কবে সরকার এবং হাইকোর্ট এদের প্রতি মানবিক হবে? কবে তাদের ন্যায্য চাকরি ফিরিয়ে দিতে উভয় পক্ষ একমত হবে? অপেক্ষায় রয়েছেন বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীগণগণ। স্কুল সার্ভিস কমিশনের তথ্য সংক্রান্ত ঘর বন্ধ থাকার কারণে স্কুল সার্ভিস কমিশনের পক্ষ থেকে বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীদের বিষয়ে কাজ শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না এমনটাই জানা যাচ্ছে। তবে শিগগিরই কমিশন তথ্য সংক্রান্ত ঘর খুলে দেওয়ার জন্য হাইকোর্টের কাছে আবেদন করবেন এমনটাই বিশেষ সূত্রে খবর। যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চের স্টেট কো-অর্ডিনেটর সুদীপ মন্ডল জানিয়েছেন যে বঞ্চিত শিক্ষক- শিক্ষিকা পদপ্রার্থীদের ধর্ণার ৫৩৫ দিন অতিক্রান্ত হয়ে গিয়েছে। বুকভরা যন্ত্রণা আর চোখের জল নিয়ে তারা গান্ধীমূর্তির পাদদেশে দিনের পর দিন ধর্ণায় বসে রয়েছেন। এবার অন্তত সমস্যার সমাধান করতে মহামান্য হাইকোর্ট এবং সরকার একমত হয়ে মানবিকতার সাথে নবম – দ্বাদশের মেধাতালিকা ভুক্ত অথচ চাকরিতে নিয়োগ না পাওয়া সকল শিক্ষক-শিক্ষিকা পদপ্রার্থীদের অতি দ্রুত চাকরিতে নিয়োগের সুব্যবস্হা করুন। আমাদের জীবন থেকে বিগত মূল্যবান ছয়টি বছর চলে গিয়েছে। বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীদের অধিকাংশই সর্বশান্ত হয়ে পড়েছে। এদের ন্যায্য অধিকার অতি দ্রুত ফিরিয়ে দেওয়া হোক।
KOLKATA: দিন যাচ্ছে চলে, বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীগণ জীবন যন্ত্রণায় ছটফট করছে গান্ধীমূর্তির পাদদেশে
রিপোর্ট : নিজস্ব সংবাদদাতা , এই যুগ, কলকাতা