ফের আরেকবার অভিনেত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু তাও আবার শুটিং চলাকালীনই I এই ঘটনা ঘটেছে গত ২৪ শে ডিসেম্বর হিন্দি ধারাবাহিক আলিবাবা: দাস্তান-ই-কাবুলের সেটে I অভিনেতা শিজান খানের মেক আপ রুমে আত্মহত্যা করেন অভিনেত্রী তুনিশা শর্মা। তাঁর মৃত্যুর পর থেকেই উঠে এসেছিল নানাবিধ জল্পনা। তুনিশার মা পুলিশের অভিযোগ করেছিলেন, তুনিশাকে যৌন আসক্তির জন্য টানা কয়েক মাস ধরে ব্যবহার করেছিলেন তার প্রেমিক শিজান খান। এবার সেই অভিযোগকে আরও গুরুত্ব দিয়ে মারাত্মক খবর প্রকাশ্যে আনলেন তুনিশার বান্ধবী রায়া লাবিব।তুনিশার এই বান্ধবী দাবি করছেন অভিনেতা শিজান খান একই সময়ে একাধিক নারীর সঙ্গে ‘ডেটিং’ করছিলেন এবং নিজের শারীরিক চাহিদা মেটাতে একসাথে প্রায় ৬ থেকে ১০ জন মহিলার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক বজায় রেখে চলছিলেন। রায়া এও জানিয়েছেন যে শিজান এই সমস্ত মহিলাদের সাথে প্রেমের অভিনয় করছিলেন এবং প্রত্যেকের সাথে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এই মহিলারা শিজানের সুন্দর চেহারা দেখে তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হতেন এবং প্রেমে পড়তেন, অন্যদিকে শিজান নিজের যৌন আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য এঁদের প্রত্যেককে ব্যবহার করতেন।রায়া লাবিব স্পষ্ট দাবি করেছেন যে, তাঁর চেনা অন্য এক মহিলাও শিজানের সঙ্গে দীর্ঘ দিন সম্পর্কে জড়িয়ে ছিলেন। টানা ৪ মাস ধরে শিজান তাঁকে ব্যবহার করছিলেন। কিন্তু, যখন তিনি জানতে পেরে যান যে, শিজান তাঁর সঙ্গে সম্পর্কে থাকাকালীনই অভিনেত্রী তুনিশার সঙ্গেও সম্পর্কে রয়েছেন, তখন তিনি শিজানের সাথে নিজের প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে দেন। বর্তমানে তিনি মানসিকভাবে একেবারে বিধ্বস্ত এবং মানসিক চিকিৎসার অধীনে রয়েছেন, ফলত শিজানের বিষয়ে তিনি কোনও কথা বলতে চান না। তুনিশার সঙ্গেও একই কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন শিজান। তুনিশাকে দীর্ঘ দিন ধরে তিনি যৌন লালসা মেটানোর জন্য ব্যবহার করেছিলেন এবং তারপরে নিজেদের সম্পর্কে দাঁড়ি টানেন। এরপর যখন তাঁর আরও একাধিক সম্পর্কের কথা তুনিশার কানে আসে, তখন তিনি সরাসরি শিজানকে সেবিষয়ে প্রশ্ন করেন। কিন্তু, তখন শিজানের বক্তব্য ছিল যে, তাঁদের মধ্যে তো আর কোনও সম্পর্ক নেই, ফলে এবিষয়ে কোনও প্রশ্নের জবাব দিতে তিনি বাধ্য নন। রায়ার দাবি, ঠিক এই কারণেই নিজের জীবন শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তুনিশা।রায়া আরো বলেন মৃত্যুর সময়ে তুনিশা গর্ভবতী ছিলেন না, এটা চিকিৎসকদের দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে ঠিকই, তবে এটা আশংকা করা যায় যে, তুনিশা মৃত্যুর কয়েকমাস আগেও শিজানের দ্বারা গর্ভবতী হয়েছিলেন। তখন তিনি বিশেষ ওষুধ খেয়ে নিজের গর্ভপাত করিয়ে থাকতে পারেন। মৃত্যুর দিন সকাল থেকে তুনিশাকে কোনও বিষয়ে খুব চিন্তিত থাকতে দেখা গিয়েছিল বলেও জানিয়েছেন রায়া। তাঁর দাবি, তুনিশা শিজানের প্রেমে পাগল ছিলেন এবং তিনি তাঁকে বিয়ে করতে চাইছিলেন।উল্লেখ্য, ২৮ বছর বয়সী অভিনেতা শিজান খান যে ২০ বছর বয়সী অভিনেত্রী তুনিশা শর্মাকে কয়েক মাস যাবৎ ‘ব্যবহার’ করছিলেন এবং তুনিশাকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে দেওয়ার জন্য তিনিই দায়ী, এই মর্মে একটি এফআইআর দায়ের করেছিলেন তুনিশার মা। অভিনেত্রীর ময়নাতদন্তের পর শিজানকে গ্রেফতার করে ওয়ালিভ থানার পুলিশ। প্রেমের সম্পর্কে ইতি টানার কারণ জিজ্ঞেস করা হলে শিজান পুলিশকে জানিয়েছিলেন, তিনি দিল্লির আফতাব আমিন পুনাওয়ালার দ্বারা নিজের প্রেমিকা শ্রদ্ধা ওয়াকারের খুনের ঘটনার কথা জেনে খুবই দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন, কারণ, বর্তমানে দেশ জুড়ে ভিন ধর্মের প্রেমিক-প্রেমিকাদের বিবাহের বিরুদ্ধে ব্যাপক আলোড়ন শুরু হয়েছে।কিন্তু তার এই বক্তব্য তুনিশার পরিবার মানতে রাজি নয় I তাদের অনুরোধ পুলিশ যেন এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে তাহলেই প্রকিত সত্যি বেরিয়ে আসবে I বর্তমানে এই ঘটনা বিনোদন জগত ছাড়িয়ে আম জনতার মনেও গভীর কৌতুহল তৈরি করেছে I সোশ্যাল মিডিয়াতেও ঝড়ের গতিতে ভাইরাল হয়েছে তুনিশার মৃত্যু রহস্যের ঘটনা I বিভিন্ন মহল থেকে এই মৃত্যু ঘিরে জল্পনা শুরু হয়েছে I আগামী দিনে যে সেটা আরো বাড়বে তা নিঃসন্দেহে বলা যায় I আপাততঃ এই মৃত্যু রহস্য যে বিনোদন জগতের অনেক অজানা তথ্য সামনে নিয়ে আসবে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না I