Breaking News

Wildlife: বিশ্ব বন্যপ্রাণ ও আমরা

রিপোর্ট : সৌভিক চক্রবর্তী, এই যুগ, নিউজ ডেস্ক

ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, (Wildlife) টুইটার প্রভৃতি হলো জনপ্রিয় গণমাধ্যম। এগুলোর মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন রকম আপডেট পেতে থাকি ঠিক যেমন ৩রা মার্চ ধারাবাহিকভাবে কয়েকজনের পোস্টে দেখেছিলাম কেউ তাদের পোষা বিলাতি ব্রিডের নানারকম সব সারমেয় নিয়ে পোস্ট দিচ্ছে কেউ বা আবার রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার , (Wildlife)বিশাল কেশরযুক্ত সিংহের ছবি পোস্ট করছে। প্রথমটায় বুঝতে পারিনি কিন্তু ক্যাপশনে চোখ পড়তেই ‘আপডেটেড’ হয়ে গেলাম ‘#WorldWildlifeDay’ এর মাধ্যমে।
Wildlife: বিশ্ব বন্যপ্রাণ ও আমরা হ্যাঁ, ২০১৩ সালে UNGA এর (Wildlife)ঘোষণা অনুসারে ৩মার্চ দিনটিই ওয়ার্ল্ড ওয়াইলড লাইফ ডে। এই দিনটি বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ভাবে পালিত হয়। কোথাও নাটক কোথাও পথসভা তো কোথাও সচেতনতা শিবির হয়ে থাকে।  আসুন আমরা আসলে কতটা সচেতন একবার চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক –

২০১১ সালে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজার্ভেশন অব নেচার যে কোয়ান্টেটিভ ইভ্যালুয়েশন করে, তাতে দেখা গেছে ভারতে ৫৭ টি ভয়াবহভাবে বিপন্ন (critically endangered) প্রজাতির প্রাণী রয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজার্ভেশন অব নেচারের সংজ্ঞা অনুযায়ী এটিই সর্বোচ্চ বিপন্নতা। অর্থাৎ, বিগত ১৯ বছরে বা তিনটি প্রজন্মে এই প্রজাতির প্রাণীর সংখ্যা ৮০% বা তার বেশি কমে গেছে।
ভয়ানকভাবে বিপন্ন প্রজাতি
পাখি : হোয়াইট-বেলিড সেরা, ফরেস্ট আউলেট, স্পুন বিলড স্যান্ডপাইপার, সাইবেরিয়ান ক্রেন, হোয়াইট-রাম্পড ভালচার, ইন্ডিয়ান ভালচার।
স্তন্যপায়ী, সরীসৃপ, উভচর, মাছ : নাইফটুথ শফিশ, ফোর-টোড টেরাপিন, রুফড টার্টল, ফ্লাইং স্কুইরেল, স্নো লেওপার্ড, জাভান রাইনোসেরাস, পন্ডিচেরী শার্ক, গ্যাঞ্জেস শার্ক।

আমরা ছোটো বেলায়  শিখেছিলাম উইপোকা থেকে সিংহ, মানুষ থেকে নীল তিমি এদের প্রত্যেকেই বাস্তুতন্ত্র রক্ষার্থে নিজ নিজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কিন্তু আমরা অধিকাংশই শুধুমাত্র ইঁদুর দৌড়ে নেমে প্রথম হতে হবে এই ভেবেই পড়াশোনা করে থাকি। কাজেই চ্যাপ্টার শেষ, পরীক্ষা শেষ ঐ বিষয়টাও অজান্তেই শেষ হয়ে যায়।
আমাদের দৈনন্দিন জীবনের আর পাঁচটা স্বাভাবিকতার মধ্যেই যৌনতা পরে। কিন্তু সমগ্র এশিয়া জুড়ে বিকৃত যৌনতা চরিতার্থে যৌন উদ্দীপক যে জিনিস টি পাওয়া যায় তা আসে চোরা শিকারের গন্ডারের শৃঙ্গ থেকে যা একটি ভ্রান্ত ধারণা। মানুষের চুলে যে পদার্থ থাকে তা দিয়েই শৃঙ্গ তৈরী হয় গন্ডারের। এবার আপনারাই বলুন মানুষের চুল কী যৌন উদ্দীপক হতে পারে!
এরকম হাজারো অন্ধবিশ্বাসের দরুণ শকুন, পেঁচা সহ বহু প্রাণীকেই অস্তিত্ব খোয়াতে হচ্ছে।
আমরা কেউ কেউ জানি বা অনেকেই জানিনা যে Wildlife protection Act, 1972 বলেও এক ধরনের আইন আছে (উইকিপিডিয়ায় সমস্ত তথ্য পেয়ে যাবেন) যা ঐ সংবিধানেই সীমাবদ্ধ।
কারখানা নির্মানেই হোক বা রাস্তা তৈরীর নাম করে পিচ-কংক্রিট এর ছুরি দিয়ে চলছে বনাঞ্চল কাটার কাজ। ফলে স্বাভাবিকভাবেই প্রাণীদের বাসস্থান, খাদ্য সবকিছুতেই ব্যাঘাত ঘটছে আর যার ফল স্বরূপ বেড়ে চলেছে বন্যপ্রাণ আর মানুষের সংঘাত। কখোনো নিরীহ হাতি, বাঘ, শিয়াল কখোনোবা নিরীহ চাষীকে তার প্রাণের দাম চুকাতে হচ্ছে সরকার-সংবিধান-আইনের কাছে।
অনাবশ্যক কৃত্রিম আলোর অতি-উপস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে জোনাকি, ঝিঁঝিঁ দের সংখ্যা কমাচ্ছে।
বিশ্বের সমুদ্রের উপরিভাগের যত আবর্জনা আছে তার ৯০% প্লাস্টিক। প্রতি বর্গমাইলে ৪৬,০০০ প্লাস্টিকের টুকরো পাওয়া যায়। এর ফলে ১০ লক্ষেরও বেশী সামুদ্রিক পাখি ও একলক্ষ সামুদ্রিক প্রাণীর মৃত্যু ঘটে।

এতো কিছু জেনে বা না জেনে আমরা গা এড়িয়ে যাই। যেকোনো দিবস মানেই কি মনকাড়া ছবি দিয়ে হ্যাশট্যাগ নামানো! ঐ দিবস সম্পর্কে কি কিছুই জানার দায় নেই না দায় ভুলিয়ে রাখা হয়েছে জাত-ধর্ম-যুদ্ধ দিয়ে? সবটুকু কী আমরা এভাবেই অস্বীকার করে যাবো?

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।