Breaking News

Howrah: তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে রণক্ষেত্র হাওড়া নাজিরগঞ্জে

রিপোর্ট : শুভাশীষ দত্ত , এই যুগ, হাওড়া

Howrah: তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে রণক্ষেত্র হাওড়া নাজিরগঞ্জেহাওড়ার সাঁকরাইল থানার নাজিরগঞ্জ এলাকাতে যুব তৃণমূল নেতার বাড়িতে তাণ্ডব চালালো একদল দুষ্কৃতী। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটে হাওড়ার সাঁকরাইল থানা এলাকা। পুলিশ সূত্রে খবর শনিবার রাতে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে স্থানীয় যুব তৃণমূল নেতা আরিফ খানের বাড়িতে হামলা চালানো হয়। এই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ অধিকারিকদের সামনে উঠে আসে গুড্ডু খানের নাম। পুলিশ সূত্রে আরও জানা যাচ্ছে আরিফকে না পেয়ে ওই যুব তৃণমূল নেতার ঘনিষ্ঠদের বেধড়ক মারধরের করে গুড্ডু খানের নেতৃত্বে তার অনুগামীরা। স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে বাড়ির গেট ভেঙে ভিতরে ঢোকার চেষ্টাও করে অভিযুক্ত গুড্ডু খান এবং তাঁর অনুগামীরা। এরপর এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে আসতেই গুড্ডুকে আটক করে হাওড়া সিটি পুলিশের আধিকারিকরা।এলাকার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করার পুলিশ অধিকারিকদের সামনে ধরা পড়েছে গোটা ঘটনা। পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে শনিবার রাত্রি ১১টা ০৩ মিনিট নাগাদ আরিফ খানের বাড়ির গলি দিয়ে দৌড়ে আসে এক যুবক। পিছনে জটলার মধ্যে মারধর শুরু করে ওই যুবককে। নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করে ওই যুবক। নিজেকে বাঁচাতে গিয়ে কালো রঙের জ্যাকেট পরিহিত ওই যুবক পড়ে যায় পাশে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকটি মোটরবাইকের উপরে। এরপর একদল দুষ্কৃতী তাঁকে উইকেট ও ব্যাট দিয়ে বেধড়ক মারতে শুরু করে। তখনই আগ্নেয়াস্ত্র হাতে আরেক যুবক তাঁকে টেনে তোলে। এরপর ফের এলোপাথাড়ি ব্যাট দিয়ে তাঁকে মারধর করা হয়। তারপর একটি বাড়ির দরজাতেও ব্যাট দিয়ে জোরে জোরে বাড়ি মারা হয়।  ঘটনার তদন্তে নেমে মাসুদ খান ওরফে গুড্ডু খান ও তার শ্যালক কামুররুজমান খান ওরফে চাঁদকে গ্রেফতার করে হাওড়া সিটি পুলিশ। আর এর পরই শাসক ও বিরোধী দলের মধ্যে চাপানুতর শুরু হয়।মূলত এই গুড্ডু খান হলেন হাওড়া পৌর নিগমের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন মেয়র পারিষদের স্বামী । গত বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপিতে যোগ দেয় গুড্ডু। যদিও বিজেপির প্রার্থী না হতে পেরে বিধানসভা নির্বাচনের সময় অন্য দলের প্রতীকে প্রতিদ্বন্দিতা করে। তারপর থেকে বিজেপির সঙ্গে তার আর কোনও সম্পর্ক ছিল না বলেও সূত্রের খবর।গুড্ডু সম্পর্কে প্রতিক্রিয়াতে এবার তার নাম করে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন রাজ্যের সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায়।মন্ত্রী জানান, ‘বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরতে চেয়ে আবেদন করে গুড্ডু খান। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় ও অভিষেকের সঙ্গে দেখাও করেন গুড্ডু। এছাড়াও রাজ্যের অন্যান্য নেতৃত্বের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখেন গুড্ডু খান।’ পাশাপাশি মন্ত্রীর দাবি, দল গুড্ডুকে এখনও গ্রহণ করেনি। তাই সে দোষ করলে গুড্ডুর বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যবস্থা নিক, এমনটাই দাবি করেন অরূপ রায়।যদিও গুড্ডুর বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক অভিযোগ উঠেছে। ২০২১ সালে এই যুব তৃণমূল নেতা আরিফের বাবাকে গুলি করে খুন করে দুষ্কৃতীরা। নিহত ওয়াজুল খান তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের নেতা ছিলেন। ওয়াজুল খান খুনেও নাম জড়ায় গুড্ডু খানের। এছাড়াও গতবছর অগাস্টে তৃণমূল উপ প্রধানের বাড়িতে হামলা ঘটনা প্রকাশ্যে আসে।। তাঁকে প্রাণনাশেরও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। যদিও সেবার অভিযোগ উঠেছিল দলেরই নেতার বিরুদ্ধেই।পাশাপাশি বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে থেকে আরিফের পিতাকে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন গুড্ডু, এমনটাই অভিযোগ করা হয় আরিফের পরিবারের তরফ থেকে।যদিও এই ঘটনায় বিজেপির যোগ অস্বীকার করে বিজেপির রাজ্য সম্পাদক উমেশ রাই জানান  গুড্ডু খান ২০২১ সালে বিজেপিতে যোগদান করেছিল এটা ঠিক। বিধানসভা নির্বাচনের সময় অন্য দলের প্রতীকে প্রতিদ্বন্দিতা করেছেন। তারপর থেকে বিজেপির সঙ্গে তার আর কোনও সম্পর্ক নেই। গুড্ডুকে নির্বাচনের পরে থেকে বহু তৃণমূলের অনুষ্ঠানে দেখা গেছিল। রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের অনুষ্ঠানেও সে উপস্থিত ছিল। আসলে ওই এলাকার দখল কার হাতে থাকবে তাই নিয়ে তৃণমূলের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যেই চলছে আর একে শাসক দল নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। তাই সেটাকে ঢাকতেই শাসক দল বিজেপির ঘাড়ে দোষ চাপাতে চাইছে।শনিবার রাত্রের ঘটনার পরে থেকে মৃত ওয়াইজুল খানের ও স্থানীয় তৃণমূল নেতা আরিফ খানের বাড়িতেও পুলিশ পোস্টিং করা হয়েছে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই এলাকাতে চাপা উত্তেজনা রয়েছে।ধৃতদের রবিবার হাওড়া আদালতে পেশ করা হলে বিচারক তাঁদের ৮ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেয়। ধৃতদের বিরুদ্ধে সাঁকরাইল থানাতে কেস নম্বর ৮১/২৩ অনুযায়ী ৩২৬,৩০৭,৩৪ নম্বর ধারা ও অস্ত্র আইনে ২৫/২৭ ধারাতে মামলা রুজু করেছে তদন্তকারী আধিকারিকরা।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।