“আসি যাই মাইনে পাই” এটা এই রাজ্যে সরকারি কর্মচারীদের জন্য প্রচলিত প্রবাদ বাক্যে পরিণত হয়েছিল (Primary Teacher )। যদিও আজ সেই প্রবাদ বাক্যকে বাস্তব করেই এতদিন চালাচ্ছিলেন হাওড়ার ডোমজুড় ব্লকের প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক ধ্রুবজ্যোতি সেন (Primary Teacher )। পেশায় সরকারি স্কুলের প্রাথমিক শিক্ষক হলেও ডাকসাইডে শিবপুর এলাকার তৃণমূল কংগ্রেসের সক্রিয় কর্মী বলেই পরিচিত ধ্রুবজ্যোতি সেন।শুধু সক্রিয় কর্মী নন তিনি বর্তমানে তৃণমূল কংগ্রেসের নমঃশূদ্র ও উদ্বাস্তু সেলের হাওড়া(সদর) এর সভাপতি (Primary Teacher )। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দলীয় প্রভাব খাটিয়ে স্কুলে সই করেই তিনি বেরিয়ে যান। স্কুলে ক্লাস করার কোনো প্রয়োজনীয়তা আছে বলে মনে করেন না এমনটাই অভিযোগ ওই স্কুলের পড়ুয়াদের অভিভাবিকা ও অভিভাবকদের। সোমবার এমনই চিত্র ধরা পড়ে ডোমজুড় ব্লকের নিবরা কনভার্টেড প্রাথমিক স্কুলে। এই স্কুলে মোট পড়ুয়া সংখ্যা ২৯৩ জন। পড়ানোর জন্য শিক্ষক ও শিক্ষিকার সংখ্যা ৮ জন। যার মধ্যে ধ্রুবজ্যোতি সেনও রয়েছেন। যদিও দিনের পর দিন স্কুলের ক্লাস না করিয়ে তার শুধু উপস্থিতির খাতাতে সই করে চলে যাওয়ার এই বিষয়টি নিয়ে স্কুলের অভিভাবকেরা স্কুলের সামনে ধ্রুবজ্যোতি সেনকে ঘিরে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের অভিযোগ ধ্রুবজ্যোতি সেন শাসক দলের নেতা হওয়ার জন্য কোনো ক্লাস নেন না। তিনি রোজ স্কুলে এসে উপস্থিতির খাতায় সই করে বেরিয়ে যান। অভিভাবকদের প্রশ্ন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা হলেই কি স্কুলের নিয়ম নীতির উর্ধে ওঠা যায়! স্কুলের সামনে অশান্তির খবর পেয়ে ছুটে আসে ডোমজুড় থানার পুলিশ আধিকারিকরা। তাঁরা এসে ওই শিক্ষককে ঘেরাও থেকে বের করে নিয়ে চলে যায়।গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে যথেষ্টই ক্ষোভ সঞ্চার হয়েছে স্কুলের অভিভাবকদের মধ্যে।
ওই স্কুলের এক পড়ুয়ার পিতা ইমাশুল মোল্লা জানান ২০১৪-১৫ সালে ধ্রুবজ্যোতি সেন এই স্কুলে শিক্ষিক হিসাবে যোগ দেন। তারপর থেকে তাঁকে স্কুলের পড়ুয়ারা স্কুলে নিয়মিত দেখতে পাচ্ছিল না। তিনি একবার তার সঙ্গে দেখা হওয়ার দরুন ধ্রুবজ্যোতি স্যার কেন স্কুলে আসছেন না জিজ্ঞাসা করাতে তাঁকে ধ্রুবজ্যোতি জানান স্কুল থেকে বাইরের কাজে তাঁকে নিযুক্ত করা হয়েছে। তাই তাঁকে স্কুলে দেখা যায় না। এরপর এই ঈদের আগে তাঁকে আবার সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধি ওই স্কুলে এসে তার ক্লাস করানো নিয়ে খোঁজখবর করার দিন সেই সময় তিনি হঠাৎ স্কুলে হাজির হন। সংবাদ মাধ্যম এর প্রতিনিধিকে দেখে ওই স্কুলের বাইরে থেকে তিনি পালিয়ে যান। ইমাশুল বাবু জানান স্কুলের আর বাকিদের মতো তিনিও নিয়ম মেনে ক্লাস করলে তাঁদের কোনো অসুবিধা নেই এই শিক্ষককে নিয়ে।
যদিও বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললে শাসক দলের রোষের ও (Primary Teacher ) চাপের মুখে পড়তে হতে পারে এটা ধরে নিয়েই ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক অমর চট্টোপাধ্যায় বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চান নি। যদিও তার বক্তব্যের চেয়ে গ্রামবাসীদের অভিযোগকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়ার পরামর্শ দিতে আবেদন করে কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক। তিনি আরও জানান তার আর কয়েকটা মাস অবসর নিতে বাকি আছে। এই কয়েক মাসের মধ্যে এই ধরণের কোনো ঝামেলা অশান্তির মধ্যে তিনি ঢুকতে চান না বলেও স্পষ্টই জানান টিআইসি অমর বাবু। ধ্রুবজ্যোতি সেন স্কুলে কেন আসেন না সেটা তাকেই জিজ্ঞাসা করতে তিনি অনুরোধ জানান।
অভিভাবকদের (Primary Teacher ) বিক্ষোভ ও প্ৰতিবাদের মুখে পড়ে স্কুলে এসেও ক্লাস না করানোর বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেন নি অভিযুক্ত স্কুল শিক্ষক ও তৃণমূল নেতা ধ্রুবজ্যোতি সেন। যদিও পরে তাঁকে ফোনে করে জানতে চাওয়া হলে তিনি এই অভিযোগকে সিপিএমের চক্রান্ত বলে দাবি করেন। তার দাবি তিনি হাওড়া জেলা উদ্বাস্তু সংগঠনের সভাপতি তাই তাঁকে উদেশ্য করে এটা করা হয়েছে। যদি কারোর অভিযোগ থাকে সেটা তদন্ত করে দেখার প্রয়োজন আছে বলেই তিনি জানান।
যদিও গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে জেলা প্রাথমিক স্কুল দফতর কোনো মন্তব্য করতে চায় নি। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলেই জানা যাচ্ছে হাওড়া জেলা প্রাথমিক স্কুল দফতর থেকে।